সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির একদল গবেষকের গবেষণায় দেখা গেছে, উপবাস বা রোজা টিউমার সৃষ্টি ও এটির ক্রমবিস্তারের গতিরোধ করে থাকে। কিছু ক্যানসারের চিকিৎসার পাশাপাশি অভুক্ত থাকলে ওসব ক্যানসার ভালো হয়ে যায়। গবেষক দলটি জানায়, ‘আশা করা যায়, গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত আমাদের আরও কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতির পথ দেখাবে। তবে এ বিষয়ক আরও গবেষণা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে’। মূলত তাদের গবেষণাকর্মটি সম্পাদন করেছিলেন ইঁদুরের ওপর। তারা দেখেন, খাদ্য-পানীয় গ্রহণ না করলে টিউমার কোষগুলো শরীরের স্বাভাবিক কোষগুলো থেকে ভিন্ন রকম আচরণ করে। অভুক্ত অবস্থায় অর্থাৎ না খাওয়া অবস্থায় টিউমার কোষগুলো স্বাভাবিক কোষের শীতনিদ্রার মতো সুপ্ত বা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় প্রবেশ করে না; বরং বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে থাকে। অবশেষে নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করে ফেলে। গবেষক দলের প্রধান ভল্টার লঙ্গো এব বিবৃতিতে বলেনÑ আমরা যা দেখতে পাচ্ছি তা হলো, না খেয়ে থাকলে রক্তে যেসব জিনিসের ঘাটতি দেখা দেয়, ক্যানসার কোষগুলো সেসবের ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করে। তবে চেষ্টা করলেও কোষগুলো তা করতে পারে না।
সায়েন্স ট্রান্সলেইশনাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় লঙ্গো এবং তার গবেষক দলটি ইঁদুরের স্তন, মূত্রনালি এবং জরায়ুর ক্যানসারের ওপর অভুক্ত থাকার প্রভাব কী, তা নিয়ে গবেষণা চালান। এতে দেখা যায়, কোনো প্রকার চিকিৎসা ছাড়াই কেবল অভুক্ত থাকলে স্তন ক্যানসার, মেলানোমা নামক ত্বক ক্যানসার, গ্ল্যায়োমা নাকম ব্রেইন ক্যানসার এবং নিউরেব্লাস্টোমা নামক স্নায়ুকলার ক্যানসারের ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যায়। উপবাস থাকা যত ইঁদুরের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি ইঁদুরেরই ক্যানসার চিকিৎসা বেশি কার্যকর হয়েছে। গবেষকদের মতে, তারা ইতোমধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত মানবদেহের ওর উপবাস থাকার প্রভাব নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। তবে আরও কয়েক বছর লাগবে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এরপরই নিশ্চিত হওয়া যাবে ক্যালরি গ্রহণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্যানসার রোগীরা উপকার পাবেন কিনা।
লেখক : সদস্য, বাংলাদেশ
ক্যানসার সোসাইটি
চিকিৎসক ও গবেষক
২১ গ্রিন কর্নার, গ্রিন রোড, ঢাকা
০১৬৮৪০৯৬৪৫, ০১৭৪৭৫০৫৯৫৫
পাঠকের মতামত